মানুষ, মনুষ্যত্ব ও ধর্ষন

মোঃ শহীদ হোসেন হৃদয়:-

অনেক দিন ধরে লেখালেখি হয় নি। কিন্তু, সাম্প্রতিক সারা বাংলা জুড়ে ধর্ষন আর ধর্ষক শব্দটি বেশ নাড়া দিয়ে উঠেছে। ধর্ষন একমাত্র মানুষের দ্বারাই সম্ভব। কেমন মানুষ? যাদের কোনো মনুষ্যত্ব নেই, যারা বাঘের বাচ্চা রূপী মেচো বিড়াল। যাদের শুধু ক্ষমতা আর বিত্তের বড়াই আছে। আমার শিক্ষক, মোস্তাফিজুর রহমান শামীম স্যার, হারহামেশায় বলেন, ব্যক্তি মাত্রই ব্যক্তিত্ববান নয়। তেমন, মানুষ মাত্রই কিন্তু মনুষত্ব্যের অধিকারী নয়।

কয়েকটা লাইন,

পুরাতন অপরাধ আজ,
নিত্য নতুন সাজে,
ধর্ষকের পেনিসের আঘাতে,
কারও ভার্জিনিটি কাটে।
শরীরকে সে বন্দি করে ঘরের ভিতরে,
সমালোচনা তবুও চলে বোরখার অন্দরে।
ধর্ষনের পর মিছিল বেরোয়,
হয় আলোচনা।
প্রতিবাদ আজ জোরালো হোকনা-
কারন, অন্ধকারের শরীর তো
আর ভোগের বস্তু না।

কষ্টের পারদ চড়তে থাকে
ধর্ষিতার অন্তরে,
দু’লক্ষ কিংবা পাঁচ লক্ষ
সরকারের বিচারে।
চশমার ফাঁকে,দামি পোশাকের আড়ালে,মানুষকে কি যায় চেনা?

মনেতে তাদের ধর্ষনের প্রশ্ন,
মুখেতে শুধুই সান্ত্বনা।
একটি ধর্ষনের পর যায় কি চরিত্র চেনা?
প্রশ্নগুলো সহজ, উত্তরটা কি জানা?
একদিন সবই ফুরিয়ে যাবে,
কমবে ক্ষতের ভাগ।
ধর্ষিতা কি ভুলতে পারবে,
সেই রক্তের দাগ।
এই তো, গত কয়েকদিন আগে, ঢাকা ওয়ারীর সায়মা(৭) শিশুটিকে ধর্ষন করে খুন করা হয়। আমি সাইমার, হ্যা, আমি এই মৃত সাইমার কথাই বলছি। মনটা খুতখুত করছে কয়েকটা প্রশ্নের আনাগোনায়। আচ্ছা, বাচ্চা সাইমার বুকের সাইজ কি ৩৪ ছিলো নাকি ৩৬? সে কি দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ইশারায় আহবান জানাতে পারতো? সে কি দৃষ্টি আকর্ষনীয় কাঁচুলি পড়েছিলো যার এক কাধ থেকে একটা ফিতা বের হয়ে ছিলো? আর কি কি একটা মেয়ের মাঝে দেখে আপনাদের বীর্য পতন হয়? তার সব এই মেয়ের মাঝে ছিলো? আসল কাউকে কিছু আসলে বলার নেই! প্রায় প্রত্যেকটা ভালো মানুষর মধ্যেই একটা খারাপ মানুষের বসবাস থাকে। যার জন্যেই, সবকিছু, দেখে বুঝেও সবাই নীরব, নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে।

আপনি দোষ দেবেন কাকে? বলবেনই বা কাকে, সবাই তো একেকটা বাঘের বাচ্চা। আসলে, আমাদেরই ভুল, বাঘ কিন্তু সবচাইতে নিকৃষ্টতম পশু। আর এই পশুগুলোকে নিজের আশ্রয়ে লালন পালন করছে সরকারী, বে-সরকারী, বিরোধী দলীয় জাতীয় অথবা প্রান্তীক কিছু ক্ষমতাবান বিত্তশালীরা। যাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস সাধারন জনগনের নেই। দিনের আলোয় তারাই আপনাকে সামনে থেকে ভালো ভালো কথা বলবে, আবার রাতের অন্ধকারে তারাই পতিতার ঘরের রেগুলার কাষ্টমার হবে।

আমি কোনো লীগ, দল, বা পার্টি কিংবা সাপোর্ট কোনোটাই করি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার বাবার আদর্শে বড় হতে চাই এবং সেভাবেই নিজেকে পরিচালিত করার চেষ্টা করছি। এখানে হয়ত, অনেকে আমার অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলবে, তার আগে আমি আপনাদের একটি ইংরেজী প্রবাদ বলি, “Oil your own machine.”

পুরো কথাগুলো না পড়ে কিন্তু যাবেন না, এখনো অনেক কথা বলতে বাকি আছে,

ইদানিং কিছু কিছু মানুষ মন্তব্য করেছে, যে মেয়েদের ধর্ষনের পেছনে নাকি তাদের পোশাক দায়ী। মেয়েরা ইসলামী শরিআ’ত মোতাবেক চলা ফেরা করে না, তাই তাদের এমন অবস্থা। আমি তাদেরকে বলতে চাই, এইসব মৌলবাদী চিন্তা-ধারনা বাদ দেন। আপনি পৃথিবীর এমন কোন দেশ দেখাতে পারবেন না, যেই দেশে সকল মেয়েরা পর্দার সহিত ঘরে বসে থাকে। আপনি যা ভাবছেন তা কিন্তু আমি নই, আমি একজন মুসলিম, আমি কোনো নাস্তিক নয়। আসলে, নাস্তিক হচ্ছে আপনার বিরূপ মনোভাব। প্রত্যেকটা জিনিসই একটা গতির মধ্য দিয়ে চলে, আমাদের জীবনটাও তাই। আমাদের সমাজটাও তাই। আপনি পোশাকের কথা বলছেন, পৃথিবীতে এখনও হাজার হাজার জাতি রয়েছে, সম্প্রদায় রয়েছে, তারা উলঙ্গ অথবা অর্ধ-উলঙ্গ অবস্থায় থাকে। তাদের সম্পর্কে আপনি কয়টা ধর্ষনের কথা শুনেছেন।

কয়েকটি প্রতিবাদী লাইন,

নাবালক বাধা মানেনা কিছুই,
উত্তেজনায় জাগে।
ইঞ্চিতে হয় হিসাব মাপা,
নরম পোশাকের ভাঁজে।
দোষ হবে ওই মাগীটার!
আহা! রে দুধের ছেলে।
দাড়িয়ে গেলে পুরুষত্ব,
দোষ তো নেই তাহলে।
তবে, পোশাকেরই দোষ হোক।
হ্যাঁ টিপের দোষ হোক,
কাজলের দোষ হোক।

কিন্তু বীর্যের দোষ। চুপ! চুপ!
এসব কি কেউ বলে!!!

ধিক এ মানসিকতা।

“নারীর পোশাকই যদি
আক্রমনের কারণ হয়
তবে ম্যালেরিয়ার জন্যে মশা নয়,
আমাদের ত্বক দায়ী।”

একজন শিক্ষার্থী যেখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করবে সেখানেই সে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। গত ছয় মাসের শিশু ধর্ষন ও নারী নির্যাতনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপরাধী হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষক। তাহলে, আমার আপনার মেয়ের, বোনের নিরাপত্তাটা কোথায়?

পূর্বে পুরুষ মানুষ মহিলাদের দিকে এক ধরনের সুষমার নজরে তাকাতো, কিন্তু কালের বিবর্তনে, সেই পুরুষই কোনো নারীর দিকে যৌনতার নজরে তাকাচ্ছে। এটা মানুষের মানবিক মুল্যবোধের অবক্ষয়। মানুষ হিসাবে প্রত্যেকেরই একটা বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সাথে মিলনের দৈহিক চাহিদা রয়েছে। যদি আপনার না থাকে, তাহলে আপনি অক্ষম। আর হ্যা, এই চাহিদা পূরনের জন্য সৃষ্টিকর্তা বিবাহ নামক পবিত্র বন্ধনের সৃষ্টি করেছেন। আপনি আপনার পছন্দের নারীর সাথে ফুলশয্যায় যাবেন, কেনো আপনি পাটের জমি, লিচু বাগান, ফাকা বাড়ি অথবা লিটনের ফ্লাটে যাবেন?
মানুষের মনুষ্যত্বটা তাহলে আজ কোথায়? আজকের ধর্ষন কোনোদিক দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের বৈশিষ্ট না তো?

নারী মানে কি শুধুই শরীর ?
নারী মানে কি ভোগের গঠন ?
নরী মানে কি লোলুপতার
লাল ঝরানো নগ্ন বসন ?
নারী মানে তো মা ও ছিলো,
নারী মানে তো শক্তি ও
মুন্ডমালা সাজিয়ে গলা
রক্ত ঝরা দুঃশাসন।
নারী মানে কেনো হারিয়ে গেলো
নগ্ন নারীর বিজ্ঞাপনে?
আজকে শুধু আগুন জলে
পাতায় পাতায় ধর্ষনে –
কালো মেঘের ঘন ঘটায়
কালি মাখা নারী মানে।

আমি ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম এর কথা না হয়, বাদই দিলাম। আমার, নিজের এলাকা, ভেড়ামারা। যেখানে, গত এক বছরে প্রায়, ১৫ টিরও বেশি শিশু ধর্ষন, নারী নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। আপনি, চাইলে তাদের লিষ্ট আমি দিয়ে দিচ্ছি, এদের মধ্যে কয়েকজনের তথ্য নিম্নে দেওয়া হলো,

১/ গত ১০ ই আগষ্ট ২০১৮, ষোলদাগ ডিপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর ১ম শ্রেনীর ছাত্রী, ৮ বছর এর শিশুকে ধর্ষন করে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের আত্নীয় আলম(৩৫)। পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় আলম গ্রেফতার হলেও পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত থেকে সে জামিনে ছাড়া পায়।

২/ গত ২ ই এপ্রিল, ২০১৮, ভেড়ামারা কোদালীপাড়ায়, মাত্র ২ বছর ৭ মাসের রেদওয়ান নামক এক শিশুকে আরাফাত(১৬) নামক এক বখাটে ধর্ষন করে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভেড়ামারা মডেল থানাতে কোনো রকম মামলা করা হয়নি বলে জানা গেছে।

৩/ গত ৯ ই জানুয়ারী, ২০১৯, ভেড়ামারার ক্ষেমিরদিয়াড় বিশ্বাসপাড়ায়, সামসের আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী, মিমকে ২ জন মিলে পাশের লিচু বাগানে ধর্ষন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে, ধর্ষক মান্নান(২৫) ও তাকে সাহায্যকারী এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু, মজার ব্যাপার হলো, গত ১০ ই জুন অভিযুক্ত আসামী মান্নান জামিনে মুক্তি পায়। মামলাটি প্রায় নিষ্পত্তির পথে। মামলা যে কিভাবে নিষ্পত্তি হয়, তা আজও আমার জানার বাইরে।

৪/ গত ২ই জুন, ২০১৯, ক্ষেমিরদিয়াড় ভাটাপাড়ায় এক রিকশাচালক এর ৫ বছরের এক মেয়ে ধর্ষন করে আব্দুল মজিদ নামের এক ব্যক্তি। যার, নিজের ছেলের বযস ৭ বছর। আব্দুল মজিদ(২৮) বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে আছে।

৫/ ভেড়ামারা কলেজ গেটের সামনে রাবেয়া নামক অনার্স পড়ুয়া এক ছাত্রীর উপর পরিকল্পিত হামলার কথা সবারই কম বেশি জানা আছে। আসামীরা এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে,

৬/ ভেড়ামারায় নুসরাতকে জোরপূর্বক ধর্ষন ও পরিবারের উপর ক্ষমতাসীনদের প্রভাব যা অনেকেরই জানা আছে। কারা এইসব কাজ করেছে, তাও অনেকের জানা।

আপনি যদি কুষ্টিয়া জেলার কথা চিন্তা করেন, তাহলে গত তিন মাসে ৭ জন শিশুসহ মোট ১২ জন ধর্ষনের শিকার।
এর মধ্যে, দৌলতপুরে ৩ জন, ভেড়ামারায় ২ জন, কুমারখালীতে ২ জন, সদর থানায় ২ জন, ইবিতে ১ জন, কুমারখালীতে ১ জন, ও মিরপুরে ১ জন মোট ১২ জন ধর্ষনের শিকার। এর মধ্যে অধিকাংশ অপরাধীরাই ধরা ছোয়ার বাইরে।

কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? এটা আমার আপনার প্রিয়, কুষ্টিযার চিত্র। তাহলে, ভাবুন সমগ্র বাংলাদেশে কিরুপ চিত্র হতে পারে বা হচ্ছে। গত ৬ মাসে সারা বাংলাদেশে সায়মার মতো ৫০০ এর অধিক শিশু ধর্ষনের শিকার হয়। যাদের কয়েকটা অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। বাকিরা, পাগার পার। এখানে, কথা হলো, তাহলে শিশু ধর্ষনের জন্য যে মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রধানমন্ত্রী দিলেন, তার কি হলো? প্রয়োগটা কোথায়? গ্রেফতারকৃত আসামীরা ছাড়া পায় কিভাবে?

আজকে, সায়মাকে নিয়ে অনেক কিছু হচ্ছে, কৈ, নুসরাত, মিম, রেদওয়ান, শাপলা, সাদিয়া, এদের কে নিয়ে তো কিছু হচ্ছে না। কেনো হচ্ছে না? কারন আমি আপনি বসে আছি, তাই হচ্ছে না। আচ্ছা, বলুন তো, আপনার বিছানায় যদি ছাড়পোকা হয়, তাহলে আপনি কি করবেন, নিশ্চয় সেগুলোকে মেরে ফেলে ঘরটা পরিষ্কার করবেন। নাকি সেগুলো ঐরকমই রেখে দিবেন?

আপনি শেখ রাসেল পার্কের নাম নিশ্চয় শুনেছেন। আরে, সাতবাড়িতে যেই পার্কটা আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব বানিয়েছেন। বলতে পারেন, সেখানে কোনো নষ্টামু হয় না? আপনি কি জোড় গলায় বলতে পারেন, সেখানে কোনোরকম অশৃঙ্খল-বখাটে ছেলেরা স্কুল কলেজে পড়ুয়া মেয়েদের নিয়ে যেয়ে যৌন নেশায় মগ্ন থাকে না। আপনি তা পারবেন না। কারন, এই কাজগুলো সেখানে হয়। [বিঃদ্রঃ আমার কাছে যথেষ্ট প্রমান সাপেক্ষ ছবি আছে। নিরাপত্তার সাপেক্ষে তা দেয়নি] পার্কের সামনে পাহাড়া দেয় শত শত বখাটে। আপনি কি জোড় গলায় বলতে পারবেন, যে সেখানে পুরো বাংলাদেশ জুড়ে আলোচিত রিফাত-মিন্নি এর মতো আরেকটা ঘটনা আমাদের ভেড়ামারাতে ঘটবে না। যে, অবস্থা তা ঘটতে কতোক্ষন? কারন অনুরুপ চিত্র সর্বদা পার্কের সামনে থাকে। আর এদের কোনো দোষ নেই, স্থানীয় ক্ষমতাসীনরাই তাদের সে কাজ করার লাইসেন্স দিয়েছে তো।

আমি ভেড়ামারা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। লাইব্রেরীর সাথে আমার নীবিড় সম্পর্ক। মাঝে মাঝে পরিচিত, কাছের প্রিয় স্যারদের সাথে দেখা করতে যায় যা আমাকে খুব আনন্দ দেয়। কিন্তু, অপরদিকে ক্যাম্পাসের দিকে তাকালে আবার দুঃখও লাগে। আমি জানি না, এতে আমার কলেজের সন্মানে আঘাত হানবে কি না? হয়তবা হানতেও পারে, কিন্তু কি করবো বলেন, সত্যটা কোনোদিন চাপা থাকে না। ক্লাশ চলাকালীন সময়ে আপনি দেখবেন ভেড়ামারা কলেজের চারিপাশের দেওয়ালের পাশে যে গাছ গুলো রয়েছে, তাতে কপোত-কপোতীরা কি আয়েশে আড্ডা দেয়। তাদেরকে বলা হলে বলে এটা গ্রুপ স্টাডি। আসলে আমার বোঝার বাইরে, ক্লাশ চলাকালীন সময়ে একটা ছেলে, একটা মেয়ের সাথে একসাথে কি গ্রুপ স্টাডি করে?[বিঃদ্রঃ আমার কাছে যথেষ্ট প্রমান সাপেক্ষ ছবি আছে। নিরাপত্তার সাপেক্ষে তা দেওয়া হয় নি] এ কথাতে আপনি হয়ত বলবেন, এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ, তাই এটা স্বাভাবিক চিত্র। মেনে নিলাম, কিন্তু ওরা আমার আপনার কোনো বোন, ভাই, আত্নীয়। ওরা আজ ক্লাশ বাদে আড্ডা দেয়, কলেজ ক্যাম্পাসে মেয়ের হাত ধরে ঘুরে বেড়ায়। এটা ওদের স্বাধীনতা নাকি পিতৃপুরুষদের ক্ষমতার বড়াই? কলেজের উত্তর পশ্চিম দিকে বাইরের স্টুডেন্টারা সবসময় বসে থাকে। মেয়েদের উত্তক্ত করে। বিষয়টি অনেক স্যারেরই অবগত। কিন্তু, ঐ যে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তাই কারোর কিছু করার নাই। আসলে অভিযোগটা কার বিরুদ্ধে এটা দেখার বিষয়। কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা এখানে নীরব। আমার বিশ্বাস, বিদায়ী অধ্যক্ষ জনাব সামসুল বারী স্যার এ বিষয়ে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নিবেন।

ভেড়ামারাতে অন্যান্য বিনোদনের জায়গাতেও এই একই অবস্থা। রায়টা পাথরঘাট, হার্ডিঞ্চ ব্রিজ সংলগ্ন বিনোদনমূলক জায়গাগুলোতে ১০ জন বিবাহিত দাম্পত্তি ঘুরতে গেলে ৪০ জন অবিবাহিত দাম্পত্তিকে আপনি খুঁজে পাবেন।

আজকে আমাদের এই সমাজে ছাড়পোকা ঢুকে গেছে। আর এই ছাড়পোকা দমন করতে আমার আপনার সকলের একাত্নতা প্রয়োজন। ওরা তো নরপশু, আর কতোদিন ওদেরকে বাঁচিয়ে রাখবেন??? কতদিন ওদেরকে সহায়তা দিবেন? প্রশ্রয় দিবেন?

কথাটা হচ্ছে একটা জায়গায়, ছাড়পোকা মারলে আবার অন্য জায়গায় ছাড়পোকা হবে। কিন্তু, ছাড়পোকা উৎপন্ন রোধ করা গেলে, বা বংশ নির্বংশ করে দিলে তো আর হবে না। প্রতিরূপ, আমাদের ঐ সব মানুষরূপী জানোয়ারদের সহায়তাকারী, ইন্ধনদাতাগনদের খুঁজে বের করে জনগনের সামনে এনে প্রকাশ্যে তাদের মুখোশ খুলে দিলে, বাঘের বাচ্চা আর তৈরি হবে না বলে আমি মনে করি।আমাদের প্রত্যেকেরই প্রতিবাদী আগ্নেয়াস্ত্র মন, মানসিকতা তৈরি করতে হবে।

যদি তুমি পেতে চাও
শান্তি ও মুক্তির স্বাদ,
কঠিন স্বরে করতে হবে
অন্যায়ের প্রতিবাদ।
তাতে যদি তোমার উপর
আসে বন্ধু আঘাত,
সেই আঘাতে পুরো জাতির
সারবে পক্ষাঘাত।

চারিদিকে ঘটছে অনেক
অবিচার, খুন, গুম ও ধর্ষণ;
সেসব দেখে নীরবে তুমি
করো না অশ্রু বিসর্জন।
করো শপথ থামাতে এবার
মজলুমের আর্তনাদ,
অত্যাচারীর প্রতি এবার ছাড়ো
তোমার সিংহনাদ!

এখনই সময় ঘটাও তোমার
আত্মশক্তির উদ্বোধন,
তবেই হবে সম্ভবপর
অশুভশক্তির বিনাশ-সাধন।
দাউদাউ করে আগুন
জ্বলুক সবার অন্তরে,
ছারখার হবে জালিমেরা
সেই আগুনে পুড়ে।
সত্যের জয় হবেই হবে
এটাই চিরন্তন,
সত্য-ন্যায়ের পক্ষে লড়াই
চলবে আমরণ।
আসলে, এই কথা বলার কারন হলো, দেখুন আমরা যদি নিজ নিজ স্থান থেকে এইরকম ঘটনা থেকে একটু সচেতন থাকি। প্রশাসনের সাথে সর্বরকম ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করি, তবে আমাদের প্রান প্রিয় ভেড়ামারাতে হয়তবা ভবিষ্যতে ধর্ষন, নারী নির্যাতন, বাল্য-বিবাহ, মাদকমুক্ত ভেড়ামারা গড়তে পারবো। এটা আমার আপনার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য যে আপনার পাশের অপরাধীকে চিহ্নিত করুন, তুলে দিন আইন শৃঙ্খলার হাতে। প্রশাসনের সাথে সর্বরকম যোগাযোগ ও প্রশাসনকে সাহায্য করুন।

নিজের কথা ভাবুন, নিজের পরিবারের কথা ভাবুন। সতর্ক থাকুন, অন্যকে সতর্ক করুন।

কথাগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। নিজে জানুন, অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন।

লেখাটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত। এই পোষ্টের দ্বারা কেউ মানসিক আঘাত পেলে অনুগ্রহ করে ক্ষমা করে দেবেন।

মোঃ শহীদ হোসেন হৃদয়
ইংরেজী বিভাগ, অনার্স ১ম বর্ষ
দৌলতপুর কলেজ।

বাড়ি:- ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান